marquee

“সুবহানাল্লাহ - ওয়াল হামদুলিল্লাহ - ওয়া লা-ইলাহা ইলল্লাল্লাহু - আল্লাহু আকবার”

Navigation Menu

সালাত আদায়ের গুরুত্ব ! সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ(সা:)


সালাতুল হাজত নামাজ পড়া মুসলিম ব্যক্তিি
কাবা শরীফে সালাতুল হাজত নামাজ পড়া মুসলিম ব্যক্তি

সকল প্রসংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য যিনি অত্যান্ত দয়ালু মেহের বান ।হাজার দরুদ সেই মহামানব প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ মুস্তফা(সা:)এর প্রতি ।নামজ ফারসী শব্দ আর সালাত আরবী শব্দ ।


সালাত শব্দের অর্থ কি

সালাত শব্দের আভিধানিক অর্থ—দুআ, তাসবীহ, রহমত কামনা এবং ক্ষমা প্রার্থনা। দ্বীন ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ হিসেবে সালাতের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন খুঁটি ছাড়া ঘর টেকে না, তেমনি সালাত ছাড়া দ্বীন পরিপূর্ণ হয় না।

আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের বাস্তব প্রমাণই হলো সালাত। একজন প্রকৃত মুসলমান আজান শুনে বিলম্ব না করে জামায়াতে সালাত আদায়ের মাধ্যমে তাঁর ঈমানের পরিচয় দেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন—"আমাদের ও কাফেরদের মধ্যে পার্থক্য সালাত; যে তা ছেড়ে দিল, সে কুফর করল" (নাসায়ী)।

সালাত ও ঈমানের সম্পর্ক

কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম সালাতের হিসাব নেওয়া হবে। এটি সঠিক হলে বান্দা মুক্তি পাবে, আর না হলে সে ধ্বংস হবে (নাসায়ী)। অনেকেই বলেন, “আমি সালাত পড়ি না, কিন্তু আমার ঈমান ঠিক আছে”—এ কথা ভুল। যার সালাত নেই, তার পূর্ণ ঈমানও নেই।

জামায়াতে সালাতের ফজিলত

প্রত্যেক বালেগ পুরুষের জন্য জামায়াতে সালাত পড়া ফরজ। একা একা পড়ার চেয়ে জামায়াতে পড়লে ২৭ গুণ বেশি সওয়াব মেলে (বুখারী, মুসলিম)। জামায়াতে সালাতের মাধ্যমে সমাজে পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়, ভালোবাসা বাড়ে এবং অচেনা মানুষের সাথেও পরিচয় গড়ে ওঠে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন—“যে ব্যক্তি ৪০ দিন প্রথম তাকবীরের সাথে সালাত আদায় করবে, তার জন্য দুটি ঘোষণা লেখা হবে: এক—জাহান্নাম থেকে মুক্তি; দুই—মুনাফিক থেকে নিরাপদ” (তিরমিজি)।

জামায়াত পরিত্যাগের শাস্তি

রাসূল (সা.) কঠোর ভাষায় বলেছেন—“যারা ওজর ছাড়া ঘরে সালাত পড়ে, ইচ্ছা করি তাদের ঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেই” (মুসলিম)। আজান শুনেও যারা জামায়াতে শরিক হয় না, তাদেরকে মুনাফিকের সাথে তুলনা করা হয়েছে।

সাহাবাগণ (রা.) বলতেন—আজান শুনেও জামায়াতে না যাওয়া ব্যক্তির কানে গলিত সীসা ঢালাই করাই তার জন্য ভালো! এমনকি হযরত ওমর (রা.) বলেছেন—“আমার কাছে সারারাত নফল পড়ার চেয়ে ফজরের জামায়াতে অংশ নেওয়া বেশি প্রিয়।”

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম

সালাতুল হাজত এক বিশেষ নফল সালাত বা নামাজ, যা কাউকে হারিয়ে দিলে, কঠিন সময় পার করলে বা কোনো বড় চাহিদা থাকলে আল্লাহর সাহায্য কামনায় পড়া হয়। এতে দু’ রাকাত সালাত আদায় করে মন খুলে আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজন তুলে ধরা হয়।

রাসূল (সা.) বলেন, “যার প্রয়োজন হয়, সে যেন ভালোভাবে অজু করে দু’ রাকাত সালাতপড়ে, তারপর দোয়া করে।” একান্তে ও একাগ্রচিত্তে পড়া উত্তম। এই সালাতশুধু চাওয়ার মাধ্যম নয়, বরং এক গভীর আত্মিক সংযোগ, যার মাধ্যমে মানুষ তার প্রভুর দরবারে আশ্রয় নেয়, আশা পায়, শান্তি খুঁজে পায়।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদ সালাতএক নিঃশব্দ গভীর রাতে আল্লাহর দরবারে হৃদয় উজাড় করে দেওয়া এক অন্তরঙ্গ ইবাদত। এটি ঈমানদারদের চোখের শীতলতা, আত্মার প্রশান্তি। রাসূল (সা.) নিজে নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়তেন এবং বলতেন, এতে গোনাহ মাফ হয়, দোয়া কবুল হয়, আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়।

কুরআনে বলা হয়েছে, “রাতের কিছু অংশে উঠো এবং তাহাজ্জুদ পড়ো।” (ইসরা: ৭৯) এ সালাতএমন এক সময় আদায় হয়, যখন দুনিয়া ঘুমিয়ে থাকে—কিন্তু একাকী হৃদয় আল্লাহর দয়ার ছায়ায় শান্তি খোঁজে। তাহাজ্জুদ মানে একান্তে নিজের কষ্ট-চাওয়া আল্লাহর কাছে তুলে ধরা, গভীর ভালোবাসা ও নির্ভরতার সঙ্গে।

শবে বরাতের ফজিলত

শবে বরাত হলো রহমত, মাগফিরাত আর মুক্তির এক মহান রাত—শা’বানের ১৫ তারিখের পবিত্র সময়। এ রাতে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য গোনাহগার বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, শুধু মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া। রাসূল (সা.) বলেছেন, “এই রাতে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির দিকে তাকান এবং সবাইকে ক্ষমা করেন।”

তাই এ রাত ইবাদত, তওবা আর কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়ার সুযোগ। মন থেকে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করেন। এ রাত যেন একটি আত্মশুদ্ধির দরজা—যেখানে অন্তর নিঃস্বার্থ হয়ে প্রভুর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এটি ভালোবাসা ও বিশ্বাসে পূর্ণ এক মহান মুহূর্ত।

আখেরি কথা:

আল্লাহ তায়ালা সকল মুসলমান ভাইদেরকে তাহার অনুগ্রহে পাচ ওয়াক্ত সালাত জামায়াতের সহিত আদায় করার তাওফিক দিন ।এবং মা-বোনদেরকে যথাযথ পর্দার সাথে সালাত তথা সালাত আদায়া করার সুযোগ করে দিন আমিন ।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাহার অনন্ত অসীম রহমতের মাধ্যমে আমার মন্দ কাজ সমূহ গোপন রাখুন এবং নেক কাজ করার তওফীক দান করুন।সাথে সাথে তাহার পূণ্যশীল বান্দাদের উছিলায় সতকাজ করার ও তাহাদের অনুসরন করার তাওফীক দিন।দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের জন্য আমাকে কবুল করুন এবং জ্ঞান দান করুন,আমীন-ছুম্মাআমীন।

সালাতুল হাজত সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)

সালাতুল হাজত কি নামাজ?

সালাতুল হাজত একটি নফল নামাজ, যা কোনো বিশেষ প্রয়োজন বা দোয়া কবুলের উদ্দেশ্যে পড়া হয়। কোনো দুনিয়াবি বা দীনী চাহিদা বা সমস্যা হলে একজন মুসলমান আল্লাহর দরবারে এই নামাজ পড়ে দোয়া করে।

সালাতুল হাজত নামাজের দোয়া কী?

সালাতুল হাজত নামাজের পর নিচের দোয়াটি পড়া উত্তম:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ وَأَتَوَجَّهُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ نَبِيِّ الرَّحْمَةِ،
يَا مُحَمَّدُ إِنِّي أَتَوَجَّهُ بِكَ إِلَى رَبِّي فِي حَاجَتِي هَذِهِ لِتُقْضَى لِي

বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি তোমার নবি মুহাম্মাদ (সা.)-এর মাধ্যমে তোমার দিকে মুখ ফেরালাম, যেন তুমি আমার এই চাহিদা পূর্ণ কর।”

এছাড়া নিজের ভাষায় মন খুলে দোয়া করাও উত্তম।

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ত কী?

সালাতুল হাজত নামাজ সাধারণত ২ রাকাত নফল নামাজ। নিয়ত করা হয় এভাবে:

নিয়ত করিলাম দুই রাকাত নফল সালাতুল হাজত নামাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে, মুখ কিবলামুখী হইয়া, আল্লাহু আকবার।

সালাতুল হাজত নামাজের নিষিদ্ধ সময় কোনটি?

সালাতুল হাজত নামাজ পড়া যাবে না নিচের সময়গুলোতে:

  • সূর্যোদয়ের সময় (সূর্য ওঠার সময়)
  • ঠিক মধ্যদুপুরে (যখন সূর্য ঠিক মাথার ওপরে)
  • সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় (মাগরিবের ঠিক পূর্বমুহূর্তে)

এই সময়গুলোতে কোনো নফল নামাজ পড়া নিষেধ, সালাতুল হাজতও এর ব্যতিক্রম নয়।

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ত বাংলায় কীভাবে পড়বেন?

বাংলা নিয়ত:

"আমি নিয়ত করলাম দুই রাকাত নফল সালাতুল হাজত নামাজ পড়ার জন্য, আল্লাহর উদ্দেশ্যে, কেবলামুখী হয়ে, আল্লাহু আকবার।"

পোস্ট ট্যাগ:

মুসলিম নামাজ, নফল নামাজ, সালাতুল হাজত, হাজতের নামাজ, ইসলামী জ্ঞান, ইসলামিক নামাজ, ইসলামিক দোয়া, দোয়ার নিয়ম,