ঘুষ কি?
ঘুষ কি? তা আমাদের জানতে হলে ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা জানার জন্য ঘুষের প্রকৃতি বুঝতে হবে। সাধারণত অন্যায় সুবিধা গ্রহণের উদ্দেশ্যে কাউকে অর্থ, উপহার বা সুবিধা প্রদান করাকে ঘুষ বলে। সমাজে একে কখনও "বখশিশ", কখনও "টিপস" বলা হলেও ইসলামে এটি সম্পূর্ণ হারাম হিসেবে চিহ্নিত।
সুদ কি সুদ কাকে বলে ? ইসলামে সুদের কুফল ও আধুনিক সমাজে এর প্রভাব
ঘুষ কি ইসলামে হারাম?
ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা স্পষ্টভাবে বোঝা যায় রাসুলুল্লাহ (সা.) এর হাদিস থেকে। তিনি বলেছেন, "ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতার উপর আল্লাহর অভিশাপ।" ইসলামে ঘুষ শুধু হারাম নয়, এটি সমাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা অন্যায়ভাবে উপার্জিত অর্থ গ্রহণকারীদের প্রতি কঠোর সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন।
ঘুষ সম্পর্কে কোরআন ও হাদিস
আল কোরআন আমাদের জীবনের দর্শন তা অনুসরণ করা উচিত ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা বোঝার জন্য কোরআন ও হাদিসের আলোকে দেখা যায়। ঘুষ অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার শামিল।
কুরআনে বলা হয়েছে, "তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না।" (সূরা বাকারা: ১৮৮) রাসুল (সা.) বলেন, "ঘুষ গ্রহণকারী আমানতের খিয়ানতকারী।" (আবু দাউদ: ২৯৪৩)
ঘুষ সম্পর্কে পরকালের শাস্তির কথা
প্রত্যেক মুসলমানের উচিত আখেরাত কে সামনে রেখে জীবন যাপন করা আল্লাহ শাস্তিকে স্মরণ রেখে চলা। ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা জানলে পরকালের ভয় এক নতুন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায়।
কিয়ামতের দিনে ঘুষখোরের কাঁধে তার অন্যায় উপার্জনের বোঝা থাকবে। (বুখারি: ২৫৯৭) এমনকি হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত দেহের দোয়া কবুল হয় না। (তিরমিজি: ২৯৮৯) মজলুমের বদদোয়া তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি হয়ে দাঁড়াবে।
ইসলামে ঘুষের জন্য কিভাবে তওবা করা যায়?
আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল আমাদেরকে শিখিয়েছেন কিভাবে তওবা করতে হয় মহান আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করুন।ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী যারা এ গোনাহে লিপ্ত হয়েছেন, তাদের করণীয় হলো খাঁটি তওবা। প্রথমত, ঘুষদাতার অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া জরুরি।
যদি সম্ভব না হয়, তাহলে তা সদকা করতে হবে। পাশাপাশি আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে ঘুষ থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার অঙ্গীকার করতে হবে।
ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা বুঝে যদি কেউ সত্যিকারের অনুতপ্ত হয়, তাহলে তার উচিত বাস্তব জীবনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করার পাশাপাশি নিম্নোক্ত কাজগুলো করা প্রয়োজন:
- নিজের গোনাহের কথা আল্লাহর সামনে অকপটে স্বীকার করা।
- যার হক নষ্ট করেছে তার অর্থ বা সম্পদ যথাসম্ভব ফেরত দেওয়া।
- যদি সম্ভব না হয়, তাহলে সেই অর্থ সদকা করে দেওয়া।
- নিজের মন থেকে ঘুষের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করা এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ থেকে বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা।
- পরিবার, সমাজ এবং সহকর্মীদের মাঝে ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা প্রচার করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
- নিয়মিত ইবাদত, দোয়া এবং আল্লাহর নিকট মাগফিরাত কামনা করা।
উপসংহার
শেষ কথা হলো, ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা আমাদের জানা উচিত এবং সেই অনুযায়ী আমল করা উচিত। এই অভিশপ্ত কাজ শুধু দুনিয়াতে নয়, আখিরাতে ভয়াবহ পরিণতির কারণ হতে পারে।
আসুন, আমরা সবাই ঘুষ নামক ব্যাধি থেকে নিজেদের রক্ষা করি এবং হালাল পথে জীবিকা অর্জনের চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন।
FAQ:প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
ঘুষ কেন ইসলামে হারাম?
ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা স্পষ্ট, এটি হারাম। কারণ ঘুষের মাধ্যমে সমাজে অন্যায় ও দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ে। কুরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ঘুষ গ্রহণকারীর পরকালে কী শাস্তি?
ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা অনুযায়ী ঘুষখোরদের কিয়ামতের দিনে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। তাদের আমল গ্রহণ করা হবে না এবং তারা জাহান্নামের উপযুক্ত হবে।
ঘুষের জন্য কীভাবে তওবা করতে হবে?
ঘুষ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে অনুযায়ী ঘুষ নেওয়া বা দেওয়া থেকে বিরত থেকে খাঁটি তওবা করতে হবে, অন্যের হক ফেরত দিতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।