“ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভাল কথা আর কাহার হইতে পারে,যে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে এবং নিজে নেক আমল করে এবং বলে যে, নিশ্চয় আমি মুছলমানদের মধ্য হইতে একজন।”-(হা-মিম সিজদাহ:৩৩)
মোফাচেছরীনগণ লিখিয়াছেন,যে কোন
ব্যক্তি যে কোন তরীকায় মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করেন তিনিই এই প্রশংসার যোগ্য
হইবেন।যেমন-নবীগণ তাদের মো’জেজা দ্বারা,ওলামাগণ দলিল প্রমাণের দ্বারা,মোজাহিদগণ তরবারী
দ্বারা ও মোয়াজ্জিনগণ আজানের দ্বারা, এই ভাবে যে কেহ যে কোন পদ্ধতিতেই মানব সমাজকে
সহকাজের দিকে ডাকে,চাই বাহ্যিক আমলের দিকে আহবান করুক বা বাতিনী আমলের আহবান করুক,যেমন-শরীয়তের
পীর সাহেবান ও ছুফিগণ ডাকিয়া থাকেন,সেই উক্ত সুসংবাদের যোগ্য।“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে
আমর (রা:) হইতে বর্ণিত-রাসুল্লাহ(সা:)বলেছেন,আমার পক্ষ থেকে মানুষকে পৌছাতে থাক,যদিও
একটি মা্ত্র আয়াত হয়।”(বুখারী)
আমি মুছলমানদের মধ্যে একজন :
প্রথমত: মুছলমান হইয়া আমি যে
আল্লাহর দিকে ডাকার দ্বায়িত্ব পাইয়াছি,ইহা আমার জন্য গৌরবের বস্তু।
দ্বিতীয়ত: আমি যে আল্লাহর দিকে
মানুষকে অআহ্বান করিলাম ইহাতে গর্বের কিছুই নাই।কারণ আমি একজন সাধারণ মুছলমান, আর মুছলমানদের
কর্তব্যই হইল আল্লাহর দিকে ডাকা।
হুজুর পাক(সা:)এর পর আর কোন
নবী রাসুল পৃথিবীতে আসবে না।কিন্তু আল্লাহর দ্বীন জমিনে বিদ্ব্যমান থাকবে।এবং কিয়ামত
পর্যন্ত আনেওয়ালা উম্মতের নিকট এই দ্বীন ইসলাম পৌছানোর দ্বায়ীত্ব এই উম্মতের উপর।নবীওয়ালা
কাজ করার জন্যই(সত কাজের আদেশ ও অসত কাজে নিষেধ)উম্মতের এত দাম ও শ্রেষ্ঠত্ব।আমাদেরকে
বাহির করা হইয়াছে আনেওয়ালা উম্মতের কল্যাণের জন্যই।যাতে আমরা নিজেরা নেক কাজ করি সাথে
সাথে অপরকে তা করার জন্য বলি।
মহান আল্লাহ বলেন,“হে মোহাম্মাদ(সা:)আপনি
মানুষকে নছীয়ত করিতে থাকুন,কেননা নছীয়ত করিলে নিশ্চয় মোমেনদের উপকার হইবে।”আমাদের
সমাজে বর্তমানে তবলীগের কাজে অবহেলা করা হইতেছে,মানুষ
এই কাজ হইতে একেবারে গাফেল হইয়া যাইতেছে।আলেম সমাজ যদিও কিছু কিছু ওয়াজ নছিয়ত করিতেছে
তবুও সামগ্রীক ভাবে আমরা সবাই নছীয়ত বা তালীম-তবলীগ ইত্যাদি দ্বীনি কাজে অনগ্রসর।আল্লাহর
অসীম রহমতে যারাও বা দ্বীনের সামান্যতম খেদমত করছে,তাহারা শুধু নিজেদের তুলনায় অন্যের
ফিকিরে এমনই ব্যস্ত হইয়া যায় যে,নিজের ও নিজ পরিবারের কথা বেমালুম ভুলে যায়।অথচ অপরের
সংশোধনের চেয়ে নিজের সংশোধন খুবই জরুরী ছিল।এই প্রসঙ্গে আল্লাহ রব্বুল আলামীন বলেন-
“তোমরা কি অন্য লোকদিগকে সতকাজের
আদেশ করিতেছ এবং নিজেদেরকে ভুলিয়া যাইতেছ অথচ তোমরা কিতাব পড়িয়া থাক,তোমরা কি বুঝ
না?”(বাকারা:৪৪)আমরা যারা দ্বীনের সামান্যতম প্রসারের জন্য নিজেকে খাদেম ভাবতে চাই,
তাহাদের উচিত উক্ত আয়াতের দিকে খেয়াল করা। যাতে করে আমাদের তবলীগ ওয়ালাদের ঘরগুলি যেন
পবিত্র কালামের শিক্ষার বাহিরে না যায়।কারন কাল কিয়ামতে সর্ব প্রথমে আমাকে প্রশ্ন করা
হবে তারপর আমার পরিবার সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হবে।হুজুর পাক (সা:)এরশাদ করেন,“কেয়ামতের
দিন চারটি প্রশ্নের জিজ্ঞাসাবাদ না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তি নিজ জায়গা হইতে আপন কদম
বিন্দুমাত্রও হটাইতে পারিবে না যথা-
১.জীবন কোন কাজে শেষ করিয়াছ?
২.যৌবন কি কাজে ব্যয় করিয়াছ? ৩.ধন-দৌলত কিভাবে উপার্জন করিয়াছিলে এবং কি কি কাজে খরচ
করিয়াছিলে? ৪. স্বীয় এলেমের উপর কতটুকু আমল করিয়াছিলে?”অতত্রব আমাদের সবাইকে সতর্ক
থাকা দরকার কিয়ামতের উক্ত প্রশ্নের ব্যপারে।অন্তত নিজ পরিবারের দেকভাল তো করা চাই,সাথে
সাথে সমস্ত মুসলিম ভাই-বোনদের এছলার জন্য দিলে দরদ থাকা ও ফিকির করা জরুরী।আল্লাহ
আমাকে এবং সমস্ত মুসলিম ভাই-বোনদের তাওফিক দান করুন।সাথে সাথে তাহার পূণ্যশীল বান্দাদের
উছিলায় সতকাজ করার ও তাহাদের অনুসরন করার তওফীক দিন।দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের জন্য
আমাকে কবুল করুন এবং জ্ঞান দার করুন,আমীন-ছুম্মাআমীন।